ঘরের মেঝের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা: মেঝে পরিষ্কারে কিছু গুরুত্বপুর্ন বিষয়
সারাদিনের ব্যস্ততার পর প্রত্যেকটা মানুষের আবেশের আর আরামের আশ্রয়স্থল হচ্ছে নিজের আবাস। আর সেই আবাস বা বসবাসের জায়গা হতে হবে যেমন সুন্দর তাঁর সাথে পরিচ্ছন্ন। আর এই পরিচ্ছন্নতার অন্যতম অংশ হচ্ছে ফ্লোর বা মেঝে। মেঝে যদি অপরিচ্ছন্ন হয় তাহলে তা ঘরের সৌন্দর্য অনেকাংশে কমিয়ে দেয়। বাসায় থাকা অবস্থায় সবচেয়ে বেশি কিন্তু মেঝেটাই ব্যবহৃত হয়। হাঁটার জন্য হোক, বাচ্চাদের হামাগুড়ি দিয়ে খেলার জন্য হোক বা মেঝেতে বসে কাটাকুটির জন্য, এই মেঝেটার উপরই যায় যতো ঝঞ্ঝাট। আর তাই মেঝে ব্যবহারের পর পরিষ্কার রাখাটা খুব জরুরি। তবে মেঝের ধরণভেদে এর পরিষ্কারটা জেনে নিতে হবে।
টাইলসের মেঝে
– এখন বিভিন্ন নকশা বা ডিজাইন করা টাইলসের ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই টাইলসের মেঝে পরিষ্কার রাখার জন্য সপ্তাহে অন্তত একদিন হালকা গরম পানি দিয়ে মেঝে পরিষ্কার করতে হবে। আর প্রতিদিন স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি দিয়েই মুছে পরিষ্কার রাখতে হবে টাইলসের মেঝে।
– টাইলসের মেঝে পরিষ্কারের সময় এর জোড়াগুলোর কোণা ভালো করে পরিষ্কার করতে হবে। এক্ষেত্রে পুরনো ব্রাশ ব্যবহার করতে পারেন, কোনার ময়লা পরিষ্কারে সুবিধা হবে।
– যদি বেশি অপরিষ্কার মনে হয় তাহলে পানির সাথে ডিটারজেন্ট মিশিয়ে মেঝে পরিষ্কার করতে হবে।
– মেঝের টাইলস মোছার আগে অবশ্যই ভ্যাকুয়াম ক্লিনার বা ঝাড়ু দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
টাইলসের মেঝে পরিষ্কারের সময় পানির সাথে ভিনেগার বা সিরকা মিশিয়ে মুছে নিলে টাইলস উজ্জ্বল ও চকচকে দেখাবে।
উডেন ফ্লোর বা কাঠের মেঝে
– উডেন ফ্লোরের যত্নে একটু বেশিই যত্নবান হতে হবে। এর পেছনে ঝক্কিটাও অনেক। প্রথমে উডেন ফ্লোর ভ্যাকুয়াম ক্লিনার দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
– তারপর ওয়্যাক্স অ্যাপ্লিকেটর যা দেখতে মপের মতোন এর সাহায্যে উড ফ্লোর ক্লিনার লাগিয়ে কয়েক মিনিট অপেক্ষা করুন, তারপর ক্লিনার শুকনা কাপড় দিয়ে মুছে ফেলুন।
– তারপর পানির সাথে ভিনেগারের মিশ্রণ মিশিয়ে ফ্লোরপরিষ্কার করুন। এই মেঝে পরিষ্কারে স্পঞ্জ বা তোয়ালে ভিজিয়ে পরিষ্কার করুন। পরিষ্কার করার পর দেখবেন আপনার কাঠের মেঝেটি কেমন ঝকঝকে হয়ে গেছে। টি-ব্যাগ গরম পানিতে ফুটিয়ে মেঝে পরিষ্কার করলেও উজ্জ্বল দেখাবে।
– কাঠের মেঝেতে যদি দাগ পড়ে যায় তাহলে পরিষ্কার কাপড় ভিজিয়ে হালকা করে ঘষলে কাঠের মেঝের দাগ উঠে সহজে পরিষ্কার হয়ে যাবে।
– কাঠের মেঝে পরিষ্কারের জন্য শ্যাম্পুও ব্যবহার করা যায়, এক্ষেত্রে বেবি শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন।
সিমেন্টের মেঝে
– বেশিরভাগ বাসাবাড়িতে এখনও সিমেন্টের মেঝেই দেখা যায়। সিমেন্টের মেঝে প্রতিদিন মোছা ভালো।
– সিমেন্টের মেঝে পরিষ্কারের সময় পানিতে একটু কেরোসিন মিশিয়ে পরিষ্কার করলে দেখতে চকচকে লাগে এবং মশা-মাছির উপদ্রবও কমে যায় এতে।
– অনেক সময় সিমেন্টের মেঝেতে কালো দাগ পড়ে যায়। এই কালো দাগ দূর করতে হলে ভিম বার, পানি ও ভিনেগার মিশিয়ে একটা মিশ্রণ তৈরি করুন। তারপর এই মিশ্রণ কোনো স্প্রে বোতলে ভরে ভালো করে ঝাকিয়ে স্প্রে করে নিন। তারপর ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে ফেলুন, দেখবেন কালো দাগ উঠে মেঝে পরিষ্কার ও ঝকঝকে হয়ে গেছে।
– সিমেন্টের মেঝে জীবাণুমুক্ত রাখার জন্য পানির সঙ্গে ফিনাইল মিশিয়ে পরিষ্কার করতে হবে, তাতে মেঝে জীবাণুমুক্ত থাকবে।
মেঝে পরিষ্কারে কিছু গুরুত্বপুর্ন বিষয়
– মেঝেতে বসে তরকারি বা সবজি কাটার সময় পুরনো খবরের কাগজ বিছিয়ে নিন যাতে ময়লা সরাসরি মেঝেতে না পড়ে। আর যদি তারপরও মেঝে অপরিচ্ছন্ন হয় তাহলে তা সাথে সাথে মুছে ফেলুন নাহলে দাগ পড়ে যাবে।
– মেঝে পরিষ্কারের কাপড়, মপ ও অন্যান্য উপকরণ যেনো পরিষ্কার হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন নাহলে তা থেকে জীবাণু ছড়াতে পারে।
– মেঝে পরিষ্কারের সময় আসবাবপত্র যতোটা পারা যায় সরিয়ে মুছতে হবে, অনেকদিন একই জায়গায় আসবাবপত্র থাকতে থাকতে মেঝেতে দাগ পড়ে ফ্যাকাশে হয়ে যায়।
– মেঝে পরিষ্কারে ডিটারজেন্ট ব্যবহার না করে ভালো মানের ফ্লোর ক্লিনার ব্যবহার করা উচিত।